পদত্যাগপত্রে এ বি এম সাইফুল ইসলাম লিখেছেন, "আমি নিম্নসাক্ষরকারী ১ লা মার্চ ২০০৭ তারিখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করি। ৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ফ্যাসিবাদীদের দ্বারা লাঞ্চিত ও চাকরিচ্যুত হই। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চাকুরি ফিরে পাই। ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখ প্রায় ১০(দশ) বছর পর চাকুরিচ্যুতির পূর্বে যে পদে ছিলাম অর্থাৎ সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করি। অথচ আমার সাথে যারা একই পদে একই সময়ে যোগদান করেছিল তারা সবাই ২য় গ্রেডের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার মত রাজনৈতিক কারণে চাকরিচ্যুত একজন সহকারী অধ্যাপককে একইসাথে দুইটি পর্যায়োন্নয়ন দিয়ে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয় যা একই সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়। কিন্তু আমার বেলায় দীর্ঘসূত্রিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতদসত্ত্বেও ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার মৃত্যুতে ছাত্র বিষয়ক উপ-উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আমার জুনিয়র একজনকে পরিচালক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পদে দয়িত্ব দেয়া হয়। যা আমার জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক ও বিব্রতকর বিধায় আমি উক্ত পদ হতে পদত্যাগ করছি।"
এছাড়া একটি ভিডিও বার্তায় এ বিএম সাইফুল ইসলাম জানায়, " হঠাৎ করে এই মাসের ৪ তারিখে একটা চিঠি দেখলাম যে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার দপ্তরে একজনকে পরিচাল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হল। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জামাত পন্থি শিক্ষক প্রফেসর সুজাঙ্গীর কবির সরকার। সুজাঙ্গীর কবির একাডেমিক্যালি আমার জুনিয়র। একজন জুনিয়র উপরের পদে বসে থাকবে আর একজন সিনিয়র দায়িত্ব পালন করবে উপ-উপদেষ্টা হিসেবে যেটা আমার জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক।"
তিনি আরো বলেন, "একটা বিষয় আমাকে ভাবিযে তুলেছে। জামাত পন্থি শিক্ষদের নীতি আদর্শের সঙ্গে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার দপ্তরের মত একটা দপ্তর কোনোভাবেই যায় না। যে দপ্তর ক্যাম্পাসের প্রতিটা কালচার সংগঠন, ক্লাব সংগঠন বিভিন্ন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সেই দপ্তর জামায়াত পন্থী শিক্ষদের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। জামাতের শিক্ষকরা মনে করেন নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হবে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা নারী শিক্ষক থাকবে। এরকম ধ্যান ধারণা যারা পোষণ করেন তাদের পক্ষে ছাত্র উপদেষ্টার পদ কিভাবে সামলানো সম্ভব? এসব নিয়ে আমি খুবই বিব্রতবোধ করি, অসম্মানিতবোধ করে এই জামায়াতি করণের প্রতিবাদে আমি আমার পদ থেকে পদত্যাগ করি।"
উল্লেখ্য পবিপ্রবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ বিএম সাইফুল ইসলাম জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইউট্যাব পবিপ্রবি ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রলীগের দ্বারা শারিরীকভাবে লাঞ্চিত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে প্রায় ১০ বছর চারকিচ্যুত ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী কে চাকরিচ্যুত করার জন্য পবিপ্রবির ফ্যাসিস্ট প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে।