ভারী বর্ষণে উপকূলের পাইকগাছার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি আর বেড়েছে জনদূর্ভোগ। উপজেলা কৃষি অফিস ও আদালত চত্তরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃস্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে দুই বার একটানা ভারী বর্ষণে পাইকগাছার বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এবছর বর্ষকালের শুরু আষাড় মাসের প্রথম থেকে একটানা গুড়ি গুড়ি, হালকা ও ভারি বৃস্টি লেগে আছে। এতে আমন ধানের বীজ তলা, সবজি ক্ষেত, মৎস্য লীজ ঘের, নার্সারী, পুকুর, বাগান, রাস্তা ও বসতবাড়ী তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পাইকগাছার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী উঁচু এলাকা হলেও বাকী ৬টি ইউনিয়ন নিচু এলাকায় অবস্থিত। সামান্য বৃষ্টি হলে এ সকল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে গত দিনের ভারী বর্ষণে উঁচু এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর বাজারের সোনা পট্টি, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীন রাস্তাগুলি পানিতে তলিয়ে থাকে। বাড়ির উঠানে পানিতে তলিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ বিড়াম্বনায় পড়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষরা কাজ যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়ে আর্থিক অনাটনের মধ্যে পড়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন গদাইপুরের কয়েক’শ নার্সারী ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবজি ক্ষেত ও আমন ধান ঝড়ো হাওয়ায় পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনের একটানা বৃস্টিতে মানুষের জনদূর্ভোগ বেড়েই চলেছে। গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক সামাদ গাজী জানান, ভারী বৃষ্টিতে নার্সারী, সবজি ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তার কুল, পেয়ারা ও লেবুর প্রায় তিন হাজার ছোট চারা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বাড়ির উঠান পর্যন্ত তালিয়ে রয়েছে।  
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকাবাসির একই অভিযোগ, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ানের পানি নিঃস্কাশনের ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া ব্যক্তি স্বার্থে কিছু মানুষ তার বাড়ির সামনের বা পাশের ড্রেনটি বন্ধ করে রাখায় বিভিন্ন এলাকাপানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানি ঠিক মত বের হতে পারছে না। এতে করে জলবদ্ধতা সৃস্টি হচ্ছে। পাইকগাছা মেইন সড়কের ঘোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পযেন্ট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তা আরো ভেঙ্গে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হয়ে আমন ধানের বীজ তলা তলিয়ে গেছে ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপসহকারি কর্মকর্তারা ইউনিয়ানে কাজ করছেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই প্লাবিত এলাকা পানি সরে গেলে আমন ধানের চারার তেমন ক্ষতি হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নিঃস্কাশনের জন্য নদীর স্লুইসগেটগুলি উন্মুক্ত রাখাসহ বিভিন্ন পানি নিঃস্কাশনের ড্রেনগুলি পরিস্কার করার জন্য টিমগুলি কাজ করছে।