মাগুরার মহম্মদপুরে স্কুল-কলেজ, মাদ্রসাগামী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পথচারীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে। বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে চলাচলে বিঘ্নিত হতে হচ্ছে।

এমনকি বাসা-বাড়ীতেও নিরাপদ নয়, দল বেঁধে উপজেলা সদরের বিভিন্ন বাসায় ঢুকে পড়ছে। গ্রামাঞ্চলের বাড়ীতেও দল বেঁধে বেপরোয়া চলাচল করতে দেখা যায়। এতে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়, মানুষের পোষা ছাগল ও গরুর বাছুরকে কামড় দিচ্ছে,  আবার মাঝে মাঝে মানুষ ও  কুকুরের কামড়ের শিকার হচ্ছে।  
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা ও জানা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাঝে মাঝে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রুগী আসছে এবং তাদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এই বেওয়ারিশ কুকুরের ভয়ে স্কুলে যেতে চাইনা। অভিভাবকরাও পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটার কারণে অভিভাবকরাও চরম অতঙ্কে রয়েছেন। তাই অভিভাবকদের দাবী জরুরি ভিত্তিতে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। শিক্ষার্থী ও পথচারীই শুধু নয়; প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাও আতঙ্কে থাকেন বলে জানা যায়। তাদের অফিসের মধ্যে কুকুর দল বেঁধে ঢুকে পড়ে।   

প্রাণিসম্পদ দপ্তর সুত্রে জানা যায়, তাদের সহযোগিতায় মহম্মদপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই এক সময় সরকারীভাবে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা হতো। কিন্তু এ্যনিমেল ওয়ার্ড ফাউন্ডেশন নামে একটি বিশ্ব সংস্থা বিনা কারণে প্রাণী হত্যা করা যাবেনা বলে মত প্রকাশ করেন। এর ফলে কুকুর নিধন সরকারীভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় উপজেলার সর্বত্র বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি পেয়েছে।  

এর ফলে উপজেলা সদরের বাসা, বাজার, স্কুল-কলেজের সামনের সড়কসহ গ্রামাঞ্চলের সড়ক ও বাড়ীতে কুকুর দল বেধে চলাফেরা করে। এতে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্নিত হতে হচ্ছে। চরম আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পথচারীরাসহ গ্রামাঞ্চলের মানুষ। এমনকি প্রতিনিয়ত হতে হচ্ছে দূঘৃটনার শিকার। এতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।   

উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত মোঃ নায়েব আলী জানান, আমার মেয়েসহ কয়েকজন শিক্ষর্থী কুকুরের আক্রমনে আহত হয়েছে। প্রায়ই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কুকুরের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে চাইনা। আমরাও স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। তাই কুকুর নিধন করা প্রয়োজন।   

মহম্মদপুর বি.এস.এ.আর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, উপজেলার সর্বত্র কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত আক্রমনের শিকার হচ্ছে। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
 
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুব্রত সেন বিশ্বাস জানান, কুকুর নিধন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় কমিউনিকেবল ডিজিজ কট্রোল (সিডিসি) নামক ঢাকার একটি সংস্থা র‍্যাবিস নামক ইনজেকশনের মাধ্যমে কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাদান (এমডিভি) প্রয়োগ করে থাকেন। কিন্তু এই বাজেট আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আমরা শুধু জনবল দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। উপজেলা সমন্বয় মিটিংয়ে এই বিষয়ে আমি আলোচনা করেছি। তবে কুকুর, বিড়াল, শেয়াল ও বানরে কামড়ালে বা আছড়ে নিলে সঙ্গেসঙ্গে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিতেও তিনি পরামর্শ দেন।