মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সমাজকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও ডাঃ মোঃ আঃ সালাম, সিভিল সার্জন, সাতক্ষীরা এবং মিজানুর রহমান শরীফ, উপ-পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা, উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, "মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচার সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিজীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে। সচেতনতা, শিক্ষা ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এই অভিশাপ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যে নিজের জীবনকে ভালোবাসে, সে কখনো মাদক গ্রহণ করতে পারে না। আর মাদক পাচারকারীরা দেশ ও জাতির শত্রু। তারা পুরো সমাজকে ধ্বংস করে ফেলছে। তাই মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সকলের উচিত সচেতনতা, ঐক্য ও সঠিক পদক্ষেপ। অন্যায় দেখেও চুপ থাকা অন্যায়কে শক্তি দেয়। তাই এগিয়ে আসুন, প্রতিরোধ গড়ে তুলুন এবং বিভিন্ন তথ্য দিয়ে জেলা পুলিশকে সহযোগিতা করুন।"

অংশগ্রহণকারী বক্তারা আরও আলোচনা করেন যে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার কেবল ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক নয়, বরং এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও একটি বড় হুমকি। তারা উল্লেখ করেন যে মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির জন্য পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সকল স্তরে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

এই সভায় বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও অংশগ্রহণ করে। তারা মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে তাদের চিন্তা ও মতামত ব্যক্ত করে। এছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত থেকে এই আলোচনা সভার সার্বিক কার্যক্রম কভার করেন।

মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণসচেতনতা এবং আইনি পদক্ষেপের গুরুত্ব উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরে এই বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

এই আলোচনা সভার মাধ্যমে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং তারা মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আশা করা যায়। এ ধরনের উদ্যোগ সমাজের সকল স্তরকে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একত্রিত করবে।