সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। গত নয় মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি হয়েছে ২৮টি ট্রান্সফরমার। এতে একদিকে যেমন বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার গ্রাহক, অন্যদিকে কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারগুলোর মোট আর্থিক মূল্য প্রায় ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর ফলে বহু গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় স্থানীয়রা বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে ট্রান্সফরমার বেঁধে রাখছেন। তবু আতঙ্ক কাটছে না।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিয়ম অনুযায়ী, চুরি হওয়া এলাকায় নতুন ট্রান্সফরমার বসাতে হলে গ্রাহকদের অর্ধেক খরচ বহন করতে হয়। দ্বিতীয়বার চুরি হলে সম্পূর্ণ খরচই দিতে হয়, যা দরিদ্র গ্রাহকদের জন্য মারাত্মক কষ্টসাধ্য।

চৌড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ নাজির উদ্দিন বলেন, "আমাদের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। তিন দিনেও বিদ্যুৎ পাইনি, কারণ ২২ হাজার টাকা একবারে দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।"
একই গ্রামের আরেকজন, আসলাম হোসেন বলেন, "একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে চুরির খরচ দিতে হচ্ছে। এটা চরম দুর্ভোগ।"

স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, "চুরির পরে আমরা নিজেরাই ট্রান্সফরমার লোহার শিকলে বেঁধেছি। তবু শঙ্কা কাটছে না। ট্রান্সফরমার থাকে খুঁটির ওপরে, সারাক্ষণ পাহারা দেওয়া তো সম্ভব না।"

তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো: শামসুজ্জামান বলেন, "চুরির পর গ্রাহকদের মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে সচেতনতাই মূল হাতিয়ার। প্রতিটি চুরিতে দেখা যাচ্ছে চোরেরা ট্রান্সফরমারের তামার তার নিয়ে বাক্স ও তেল ফেলে চলে যাচ্ছে। ভাঙারির দোকানগুলোতে নজরদারি বাড়াতে পারলে চোর ধরাও সম্ভব।"

তাড়াশ থানার ওসি (তদন্ত) রুপ কর জানান, "বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। চোর ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অচিরেই চোরচক্র শনাক্ত ও গ্রেপ্তার সম্ভব হবে।"