ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের মধুমন্ডলের ডাঙ্গী গ্রামে আজ সোমবার বিকেল ৫টার দিকে অবৈধ ভাবে জমি দখল ও ঘরবাড়ি নির্মানের বিরুদ্ধে ওই গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক মেম্বার পলাশ চন্দ্র মন্ডল সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় এলাকার শতাধিক নারী পুরুষ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের নিকট পলাশ অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিবেশী ও এলাকার জমি দখলকারী হাসান প্রামানিক বিভিন্ন সময়ে গোরস্থান, সুফফা ও আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসার নামে অন্যের জমির উপর নামমাত্র সাইনবোর্ড স্থাপন করে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান এনে তা যথাযথ ব্যবহার না করে নিজেই আত্মসাৎ করে।
তিনি আরও বলেন, আমার পৈত্তিক সম্পত্তি রয়েছে ৮২শতাংশ এর মধ্যে তিন দাগে মোট ২০.৫০ শতাংশ ক্রয় করে হাসান প্রামানিক গং। অথচ পেশী শক্তির জোরে অবৈধভাবে পুরো ৮২শতাংশ জমি দখল করে তাতে মাদ্রাসার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বাড়িঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন। এব্যাপারে এলাকায় একাধিক বার বিচার সালিশ হলেও হাসান কাওকে মানেন না।তার বিরুদ্ধে এলাকার নিরীহ সাধারন মানুষকে মিথ্যা চাদাবাজী মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ রয়েছে। আমি বিচার পেতে ইউএনও’র দ্বারস্থ হয়ে তার নিকট আমার জমির পরিমাপের জন্য আবেদন জানালে ইউএনও দু’পক্ষকে তার অফিসে তলব করেন। পরবর্তীতে দু’পক্ষকে তাদের স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গের সম্মুখে বেসরকারি আমিন দ্বারা তাদের জমি পরিমাপের জন্য বলেন। পরবর্তীতে জমি পরিমাপের সময় সরকারি সড়ক থাকায় তা পরিমাপের জন্য সরকারি সার্ভেয়ার, তহশিলদার ও থানা পুলিশ উপস্থিত থাকেন। ওই সময় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আমিন দ্বারা আমার জমির সীমানা নির্ধান করে সিমেন্টের খুটি পুতে রাখি।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে হাসান প্রামানিক তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই জমির সীমানা পিলার ভাঙতে না পেরে ও জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া সুলতানার উপর ক্ষুব্দ হয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে ও পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিক দ্বারা বিভিন্ন মিডিয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে ইউএনও’র মানহানি করার চেষ্ঠা করে। যাতে আমাকে ইউএনও সীমানা পিলার উঠানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পলাশ মন্ডল আশংঙ্কা করে আরও বলেন, যে কোনো সময় হাসান প্রামানিক তার সন্ত্রাসী বাহিনীদ্বারা জমির সীমানা পিলার ভেঙ্গে জমি দখলে যাবে এবং আমার পরিবারের উপর আক্রমন চালাবে। এ কারনে আমি ভিষনভাবে শঙ্কিত রয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে ভাষানচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা মো. মাঈনদ্দিন আহম্মেদ বলেন, পলাশ মন্ডল যখন কোনো বিচার পাচ্ছিল না তখন সদরপুর ইউএনও’র দ্বারস্থ হন। তখন তিনি দু’পক্ষের জায়গা পরিমাপ করে নিতে বলেন। কিন্তু হাসান মৌলভী নামের অত্যান্ত খারাপ প্রকৃতির লোক ছদ্দবেশি মৌলভী বিগত দিনে তিনি সুফফা এতিমখানা ও আয়েশা সিদ্দিকা নামের এতিমখানার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এলাকার সংখ্যালঘুদের জায়গা দখল করার জন্য মুসলিম সেন্টিমেন্ট কে তার পক্ষে নেওয়ার জন্য চেষ্ঠা করে। এ ব্যাপারে এলাকার কিছু সন্ত্রাস টাইপের লোকজন তাকে সহায়তা করে যাচ্ছে। আমি বিগত দিনে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম বিধায় আমি ওই সন্ত্রাসীদের চিনি ও জানি। হিন্দু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন কে কিভাবে বিতারিত করা যায় অনবরত সেই চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন হাসান প্রামানিক ও বাহিনীর লোকজন।
তিনি আরও বলেন, এলাকার অসহায় মানুষ কে বিচারের সহযোগিতা করা ইউএনও’র বিরুদ্ধে এখন ওই প্রতারক হাসান প্রামানিক সরকারের বিভিন্ন মহলে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। আমি চাই এই প্রতারকের বিরুদ্ধে সরকারের উর্দ্ধতন মহল তদন্ত সাপেক্ষে তার কঠিন বিচার হোক এবং শাস্তির আওতায় আসুক। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
সদরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম পান্নু মৃধা বলেন, অবৈধভাবে জমি দখল ও স্থাপনা নির্মান করে যাচ্ছেন হাসান প্রামানিক। দখলকরা জায়গা নিয়ে একাধিকবার শালিশ বৈঠক হলেও সে কাওকে পরোয়া করে না। জমি মাপার জন্য আসলেও সে সব সময় কালক্ষেপন করে যায়। পলাশ মন্ডল বাধ্যহয়ে ইউএনও নিকট বিচার প্রার্থনা করলে তিনি স্থানীয় গন্যমান্যদের মাধ্যমে জমির দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতে সমাধান করে দেওয়ার জন্য বলেন। শালিশপক্ষ তা করলে উল্টো হাসান প্রামানিক ইউএনওর বিরুদ্ধে একটা বিশেষ মহলের ইন্দনে সরকারের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী, হাসান প্রামানিক নামের চিটার বাটপারের হাত থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট বিচারের দাবী জানান। যাতে তারা এলাকায় শান্তিতে থাকতে পারেন।
এ ব্যাপারে হাসান প্রামানিকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এটা তাদের পৈত্তিক সম্পত্তি। দীর্ঘ বছর তারা ভোগ দখল করে আসছে। মাদ্রাসার অনুদান আতœসাৎ প্রসঙ্গে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।