ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন আকোটেরচর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তারা আছেন আতঙ্কে কখন কি ঘটে যায়। মোট কথা, চিকিৎসক, রোগী এবং স্বজন রয়েছেন চরম আতঙ্কে।
শুক্রবার (১ আগষ্ট) প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে, সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় উপ-স্বাস্হ্য কেন্দ্রটির এই ঝুঁকি পূর্ন অবস্থা। ভবনটির নিচ থেকে উপর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ছোট ফাঁটলও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
ভবনের কক্ষপথের বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তারা খসে খসে পড়ার চিত্র দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। কথা ঐ এলাকার রহিমা নামে ৫৬ বছর বয়সী এক নারীর সাথে তিনিও
বললেন, ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ যা যেকোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। ঘটতে পারে বহু প্রানহানির ঘটনা।
ব্যবহার না হওয়ায় ভবনটির অধিকাংশই জিনিস পত্র নষ্ট হয়ে গেছে এবং উপরের পলেস্তারা খসে পড়ে, জানালা ভাঙ্গা, বৃষ্টির পানি চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।
এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ মূল্যবান ঔষধপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। এছাড়া সেবাদানকারীদের চরম ঝুঁকি নিয়ে দ্বায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তারা মাঝে মাঝেই কম বেশি নানাবিদ সমস্যার সম্মুখীন হন।
পরিদর্শনকালে হাসপাতালে দায়িত্বরত পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা মনজুরী বলেন, আমি মাত্র ১ মাস যাবৎ এখানে জয়েন্ট করেছি। আমি আসার পর দেখি ভবনটির অবস্থা একরাবেই নাজেহাল। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে।
তিনি আরে বলেন, আমি আসার পর দুইবার চুরি হয়েছে, আমার সেবাদানের রুমে একটি ফ্যান ও কিছু চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ সংযোগের তার ও মিটার চুরি হয়ে গেছে। এখানে কোন পানির ব্যবস্থা নাই। আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাজ করছি।
অপর এক স্বাস্থ্যকর্মী পিংকি ইনকিলাব কে জানান, আকোটেরচর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এখানে রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকেন।
তারপরও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। স্হানীয় একজন স্কুল শিক্ষক রবিউল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেলর কাছে মৌখিকভাবেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে ন। তারা ব্যবস্থা নেওয়ার শুধু আশ্বাস দেন কোন কাজ হচ্ছে না। তবে ভবন ভেঙ্গে মানুষ না মরা পর্যন্ত কারোর টনক নরবে না।
এই বিষয় কথা হয় আকোটেরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী সাথে তিনি বলেন, এই চিকিৎসা কেন্দ্রটি শিশু, নারী ও সাধারণ জনগণের জন্য। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কতৃপক্ষকে অনুরোধ করছি। যাতে প্রানহানির আগেই এই জনবহুল জনগোষ্ঠীর জন্য পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা সহ ভেঙ্গে শক্ত মজবুত ও বহুতল ভবনের কাজ শীগ্রই শুরু হয়।
স্থানী রাহেলা,আসলাম,বকুল, নবীরন জানান, বৃষ্টির সময় ভবন থেকে পানি পড়ে, দেয়াল ভেঙে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয় মাঝে মাঝে আকাশের পানিতে রোগীর বেডের ঝগ আর মগ ভরে যায়।
যন্ত্রপাতির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব। বাাথরুম সৌচাগার ব্যাবহারের অযোগ্য। সংস্কার বা নতুন ভবন হলে সেবা মান উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছেন তারা সকলেই।
কথা হয়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মমিনুর রহমান সরকারের সাথে তিনি জানান, আকোটেরচর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তিনি পরিদর্শন করেছেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভবনটি সংস্কারের প্রয়োজন। সব ডকুমেন্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছি। অনুমোদন পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।
এই বিষয় কথা হয় একজন কলেজের অধ্যাক্ষের সাথে তিনি ইনকিলাবকে বলেন জীবন বড় নাকি ভবন বড়? দ্রুতই এই উপ-স্বাস্হ্য কেন্দ্রটির নতুন সংস্কার করা জরুরি।