কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ফেলে চলে যায় চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নাঙ্গলকোট রেলস্টেশনের এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ভোগে পড়েন ট্রেনটির যাত্রীরা।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নাঙ্গলকোট রেলওয়ের সহকারী স্টেশনমাস্টার, ট্রেনটির দুই চালক ও গার্ডকে সাময়িক দরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ সোমবার  পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশনমাস্টারের কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে নাঙ্গলকোটে যাত্রাবিরতি না থাকলেও সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যের দিকে পাঠানো হয়।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি (৮০২ নম্বর) নিয়ম অনুযায়ী, নাঙ্গলকোট স্টেশনে থামার কথা ছিল। তবে সহকারী স্টেশনমাস্টার রূপণ চন্দ্র শীলের ভুল নির্দেশনার কারণে সেটি না থেমে চলে যায়। ওই সময় লাকসাম রেলওয়ে জংশনের কেবিন মাস্টারকে ট্রেন চলমান রাখার নির্দেশ দেন রূপণ। কেবিন মাস্টার চট্টলাকে ভুলবশত ৭০২ নম্বর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন ভেবে সিগন্যাল দেন। ফলে নির্ধারিত স্টপেজ উপেক্ষা করে চট্টলা এক্সপ্রেস নাঙ্গলকোট অতিক্রম করে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুমিল্লা রেলের এক কর্মকর্তা বলেন, দুটি ট্রেনই গতকাল কাছাকাছি সময়ে যাত্রা করে। এ ছাড়া দুটি ট্রেনের নম্বরও (৮০২ ও ৭০২) কাছাকাছি হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপকের অনুমতি নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি নাঙ্গলকোটে যাত্রাবিরতি দিয়ে পরিস্থিতির তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়। এরপর রাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করে সহকারী স্টেশনমাস্টারসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নাঙ্গলকোট রেলওয়ের সহকারী স্টেশনমাস্টার বলেন, ‘আমি লাকসাম কেবিনে দায়িত্বরত মাস্টারকে বলেছি ট্রেন চালানোর জন্য। তিনি ৮০২ চট্টলার স্থলে ৭০২ সুবর্ণ মনে করে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন নাঙ্গলকোটে থামাননি। কেবিন মাস্টারের বলার ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। বাকিটা তদন্ত কমিটি দেখবে।’

তবে লাকসাম রেলওয়ের কেবিন মাস্টারের দায়িত্বে থাকা শিমুল মজুমদার বলেন, ‘আমি ৮০২ চট্টলা ট্রেনের কাগজ লিখে দিয়েছি। ৭০২ সুবর্ণ ট্রেনের নাম আমি লিখিনি। আমরা দুজন মাস্টার ভুল করতে পারি, কিন্তু ট্রেনের চালক ও সহকারী চালক তো ভুল করতে পারেন না। তাঁরা স্টপেজ দিতে পারতেন। এ ছাড়া ট্রেনের গার্ড তো ভুল করতে পারেন না। গার্ড চাইলেও ট্রেন থামাতে পারতেন।’

পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক বলেন, কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেটি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।