‎বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১নং আন্ধার মানিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।


‎ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে হতদরিদ্র ও দুস্থদের বাদ দিয়ে সমাজের বিত্তশালী ও চেয়ারম্যানের অনুসারীদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তালিকায় একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নাম এবং এমনকি একই ব্যক্তির দুই স্ত্রীর নামও পাওয়া গেছে, যা সরকারি নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

‎ পরিষদের সচিব মোঃ মুনির হোসেন জানান, চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খোকন তার নিজের দলীয় অনুসারীদের মধ্যে এসব সুবিধা ভাগ করে দিয়েছেন। সচিবের পরামর্শ ছিল অন্যান্য দলের সাথে সমন্বয় করে বিতরণের, কিন্তু চেয়ারম্যান তা অগ্রাহ্য করে উল্টো সচিবের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।

‎ গত ঈদেও চেয়ারম্যান তার দলীয় কর্মীদের মধ্যে ঈদ স্লিপ বিতরণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

‎নাসির উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগের কথা স্থানীয়ভাবে আলোচিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার ১৯ নং আসামি হিসেবে পলাতক থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, বহুল আলোচিত বিহঙ্গ পরিবহনের মালিকানার সাথেও তার সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, নথিতে বলা হয়েছে, এই পরিবহনের একটি গাড়িতে গানপাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে ১৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠান বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার আসামি হিসেবে আন্ধার মানিক ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি এবিএস খান স্বপনকেও ছয় মাস কারাবন্দী থাকতে হয়েছে।

‎চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এত গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়মিতভাবে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাতায়াত করছেন বলে জানা গেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এই দুর্নীতির বিষয়ে প্রশাসন কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বা কোনো তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

‎এই বিষয়ে চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খোকনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।