“উন্নত রাষ্ট্র গড়তে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখতে হবে”— বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। বুধবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে “মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫” উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “যেকোন দেশের উন্নতির অন্যতম প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম, প্রযুক্তিনির্ভর ও শিক্ষিত যুবশক্তি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখনই বৈষম্য ও বঞ্চনার সৃষ্টি হয়েছে, তখন যুব সমাজই তা রুখে দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মাদক চোরাচালানে নারী, শিশু ও কিশোরদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকার এ সমস্যা সমাধানে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ে কাজ করছে। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ বক্তব্য দেন। উপদেষ্টা জানান, প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে নতুন ধরনের সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক মাদকের (NPS) হুমকি বাড়ছে। এজন্য আইন সংশোধনসহ কৌশলগত নজরদারি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং মাদকবিরোধী অভিযানে নতুন গতি আসবে। উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি জানান, ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় শহরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। ভবিষ্যতে বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। সভায় বক্তারা মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় মাদকবিরোধী কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য বিজয়ী শিক্ষার্থী ও সংস্থার মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, স্যুভেনির ও ‘Annual Drug Report’ এর মোড়ক উন্মোচন এবং মাদকবিরোধী স্টল পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। পূর্বে বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।