বগুড়ার আদমদীঘিতে পারিবারিক কলহে আয়শা সিদ্দিকা (২০) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। তাকে তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে শারীরিক নির্যাতন ও কেচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দিয়েছে। এ ঘটনায় আদমদীঘি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইউপির বেজার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে গৃহবধূর বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় মামলাটি দায়ের করলে পুলিশ গৃহবধূর শ্বাশুড়ি তানজিলা বেগমকে (৩৯) গ্রেপ্তার করেন।বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আহত ওই গৃহবধূকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার নিখিরা গ্রামের ইদ্রিস আলীর মেয়ে আয়শা সিদ্দিকার সঙ্গে আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইউপির বেজার গ্রামের লিটনের ছেলে আরমান হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্যজীবনে জমজ দুটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। সংসারে সচ্ছলতা আনতে স্ত্রীকে রেখে প্রবাসে যান স্বামী আরমান হোসেন। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক নানা কলহে ওই গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন।বিষয়টি তার বাবা ইদ্রিস আলীকে জানালে আয়শা সিদ্দিকার শ্বশুর লিটন হোসেন, শ্বাশুড়ি তানজিলা বেগম ও ননদ সাদিয়া বিবি ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার সকালে ওই গৃহবধূকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতারিভাবে শরীর বিভিন্ন স্থানে মারধরে রক্তাক্ত-জখম করে। এরপর গৃহবধূর মাথার চুল কেচি দিয়ে অর্ধেক অংশ কেটে দেয়।
বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে নির্যাতনের শিকার আহত ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে ভিকটিম গৃহবধূর বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে শ্বশুর লিটন হোসেন, শাশুড়ি তানজিলা বেগম ও ননদ সাদিয়া বিবিকে আসামি করে আদমদীঘি থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই শাশুড়ি তানজিলা বেগমকে গ্রেপ্তার করেন।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মোস্তাফিজুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত শাশুড়ি তানজিলা বেগমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে।