দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টি ও শুষ্ক মৌসুমের কারণে পানির সংকট দেখা দিয়েছে নলজুরিসহ চারটি গ্রামারে প্রায় ৫০০ পরিবারের । এক সময় সবুজঘেরা এই গ্রামগুলো পানির সংকট ছিল না। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দিন দিন তা আরও তীব্র হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় ও ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি। নিরাপদ ও নিত্যব্যবহার্য পানি মিলছে না। তাছাড়া যেসব দূষিত পানি আছে তা পান করে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দা। দূর-দূরান্ত থেকে কষ্ট করে পানি সংগ্রহ করে এখানকার মানুষ। এতে তাদের দুর্গতি বেড়েছে।
সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ৪ নাং ওয়ার্ডের নলজুরী,শান্তিনগর,কাঠালটিল্লা,মজিবনগর গ্রাম। যে খানে প্রায় ৫শ পরিবারে ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এই ৪টি গ্রাম দীর্ঘদিন ধরে তীব্র পানি সংকটে ভুগছে।
নলজুরি গ্রামের কয়েকটি পরিবারে গভির নলকুপ থাকলেও কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে সেসব শুকিয়ে যায়। একসময় গ্রামটিতে পানির সংকট ছিল না।
এ এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসে এই সংকট আরও তীব্র হয়।
গ্রামের ব্যবসী হাজী মো.ওমর ফারুকের এবং মো. আনোয়ার হোসেনের ডাপকলের পানিই এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন সকালে- বিকালে লাইন দরে সেই খাবার পানি কলস,বাল্তি,জগ, ভিবিন্ন পাত্র দিয়ে পানি সংগ্রাহ করে রাখে এলাকার মানুষ।
শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ কমে গেলে সেখানে চরম সংকট দেখা দেয়।
এলাকাবাসী যানায়, আমরা বৃষ্টির দিন খাবার পানি কিছুটা লাগল হলেও বছরের ৬মাস খাবার পানি কষ্ট করি। পানির জন্য সন্তানদের ঠিক মত খাবার পানি দিতে পারিনা। প্রতিদিন পরিবারের সবাই খাবারের পর এক গ্লাস করে পানি খাই। আমরা পর্যাপ্ত পানি পান করতে পারি না।
দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিস'র পরিচালক হাজী মো. ওমর ফারুক বলেন, আমার গ্রামে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখে আমি নিজ উদ্যোগে গ্রামের তিনটি পয়েন্টে ডিপকল থেকে সবাইকে পানি দিয়ে থাকি। বিদুৎতের উপর নির্বরকরে প্রতিদিন সকালে এবং বিকেলে গ্রামের মানুষ খাবার পানি নিয়ে থাকে।
সরেজমিন দেখা যায়, মো. খালিক মিয়া প্রতিদিনের মতো লাইন দরে পানি সংগ্রহ করছেন।
তিনি বলেন,পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপ স্থাপন করা খুব কঠিন। কারণ নিচে পাথরে আটকে যায় পাইপ। তারওপর বেশিরভাগ মানুষ আর্থিকভাবে অসচ্ছল। ফলে খরচ অনেক বেশি হওয়ার কারণে নলকূপ সবাই স্থাপন করতে পারে না। সরকারিভাবেও নলকূপ স্থাপন করে সহায়তা না করায় মানুষ খুব ভোগান্তিতে পড়েছে।পানির জন্য প্রতিদিন এমন কষ্ট করতে হয়।এভাবে প্রতিদিন নারী পুরুষ বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য দারিয়ে থাকে।
পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য ফারুক আহমদ বলেন, আমার ওয়ার্ডের সুধু নলজুরি গ্রাম পানি সংকটে নেই; পাশাপাশি মজিবনগর,কাঠালটিল্লা,শান্তিনগর গ্রাম খাবার পানির সংকটে ভুগছে। এ গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি
গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে
পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ী এলাকায় পাইপ অনেক গভীর পর্যন্ত স্থাপন করতে হয়। এতে খরচও বেড়ে যায়। অনেক সময় পাইপ পাথরে পড়ে যায়। যারা নিজ উদ্যোগে অগভীর নলকূপ বসিয়েছে তাদের নলকূপেও শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। ইউনিয়নে পরিষদে নলকূপের এখন কোন বাজেট নাই বাজেট আসলে ৪নং ওয়ার্ডে পরিষদের পক্ষ থেকে নলকূপ স্থাপন করে দিবো।