ডিসি সম্মেলনে দেশের যুব-সমাজের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনে এক ডিসির এ সংক্রান্ত প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ।
মঙ্গলবার তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের শেষ দিনের প্রথম কর্ম অধিবেশন শেষে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
আবদুল হাফিজ বলেন, 'আমাদের যুব-সমাজের যারা আছেন তারা মিলিটারি ট্রেনিং পেতে পারেন, তারা দেশের প্রতিরক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। তবে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার, এতে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে, আমার মনে হয় এটা চিন্তা করতেই পারি। আমরা বলেছি, সরকারের নির্দশনা পেলে সশস্ত্র বাহিনী এটা করতে প্রস্তুত।'
এছাড়া ডিসিদের সঙ্গে আলোচনায় সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর বোঝাপড়া আরও কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে।
দেশব্যাপী যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ আরও বলেছেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তীত পরিস্থিতে লুট হওয়া এক হাজার ৪০০ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। পাশাপাশি আড়াই লাখ বিভিন্ন ধরনের গুলি উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা মেজর ডেল এইচ খান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সরকারের এমন উদ্যোগ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি বহিঃ শত্রুর হুমকি এবং ষড়যন্ত্রের হাত থেকে প্ৰিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে রক্ষা করে প্রতিরক্ষায় আরো বেশী শক্তিশালী অবস্থান তৈরী করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ডেল এইচ খান ইতোমধ্যে এই প্রশিক্ষণের ব্যাপারে গবেষণা করেছেন এবং কিভাবে কাকে এই প্রশিক্ষণ দেয়া যায় সে ব্যাপারে একটি রূপরেখা প্রস্তুত করেছেন। তার মতে সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয় শিক্ষা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে খুব সুলভেই এই প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে পারে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫ তম। পাশাপাশি ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানে (UNPSO) সক্রিয়ভাবে জড়িত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি অবদানকারী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যের বীরত্বে পেশাদারিত্বের যথাযথ প্রতিফলন ঘটে।
উল্লেখ্য ইসরায়েলের ৯৩ লক্ষ জনগণের মধ্যে ৪ লক্ষ ৮ হাজার রিজার্ভ ফোর্স। যার মধ্যে রয়েছেন ১৮ থেকে ২৮ বছরের তরুণ তরুণীগণ। বর্তমান বিশ্বের ৪৯ টি দেশে এই বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে।