উপজেলার ৩৬টি এতিমখানায় কাগজে-কলমে ৫০০ জনেরও বেশি এতিম শিশু থাকার কথা বলা হলেও সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে প্রকৃত এতিমের সংখ্যা ৫০ জনও নয়।
অধিকাংশ এতিমখানায় দিনের পর দিন তালা ঝুলতেও দেখা যায়, অথচ সরকারি রেকর্ডে সেগুলো “চলমান” হিসেবে দেখানো হয়েছে। বাবা-মা জীবিত থাকা সত্বেও জাল ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে এতিম' বানানো হচ্ছে শিশুদের।
স্থানীয় সূত্র ও তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য, যেসব শিশুকে এতিম দেখানো হয়েছে তাদের অনেকের বাবা-মা জীবিত রয়েছেন। চেয়ারম্যান কর্তৃক জাল ডেথ সার্টিফিকেট বানিয়ে পিতামাতাকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং এই জাল তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাপিটেশন ফান্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে।
চাঞ্চল্যকরভাবে জানা গেছে, যেসব শিশুদের নামে এই অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই জানে না যে তাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি বরাদ্দের জন্য। এমনকি, অনেক ছাত্র ইতোমধ্যে হাফেজিয়া পড়া শেষ করে এতিমখানা ছেড়ে গেছে, তবুও তাদের নাম দিয়ে এখনও অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। এদের কাছ থেকে এতিমখানা কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে খাওয়া-দাওয়া ও আবাসনের নামে টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ করে চুপ থাকার অভিযোগও রয়েছে। এই দুর্নীতির বিষয়ে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও স্থানীয় সমাজসেবা অফিস কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, দেবিদ্বার সমাজসেবা অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকার পরও একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। বরং ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গে আপস করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।
এ ধরনের ভয়াবহ দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় নয়, বরং প্রকৃত এতিম ও দরিদ্র শিশুদের অধিকার হরণ। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি। দেবিদ্বারের জনসাধারণ ও সুশীল সমাজ প্রশাসনের কাছে জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন, এমন সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।