নেত্রকোণার দুর্গাপুরে দুর্বৃত্তদের এলোপাথারি কোপে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামে পুলিশের এসআই হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। তবে এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দুর্গাপুর পৌরশহরের উকিলপাড়া এলাকার পান মহলের গলিতে দুর্বৃত্তদের এলোপাথারি কোপে গুরুতর আহত হন শফিকুল ইসলাম। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় দুর্গাপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। সেই সাথে পুরো উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার পরিবার, স্বজন,প্রতিবেশী,বন্ধু আর পরিচিতজনরা এখন শোকে মূহ্যমান। দুর্গাপুরের চন্ডিগড় ইউনিয়নের নোয়াগাঁও নিজ গ্রামে বাদ আসর নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহতের ছেলে রাফিউল ইসলাম বলেন,কেউ যেন এভাবে আমার মতো এতিম না হয়। আমার বাবার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই। নিহতের মা ফাতেমা খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,আমি আমার ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। নিহত পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন,আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। এই পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল আলম খান বলেন,এমন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় সবাই হতবাক। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। দুর্গাপুর থানার ওসি বাচ্চু মিয়া বলেন,এই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ভিডিও দেখে আসামী সনাক্তের চেষ্টা করছি।  আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামী গ্রেপ্তারে সক্ষম হবো। আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে তৎপর রয়েছে। শফিকুল ইসলাম জামালপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন এবং ছুটিতে গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজার করার উদ্দ্যেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন শফিকুল। পথিমধ্যে ওই এলাকায় ওঁৎপেতে থাকা কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কোপাতে থাকে। পরবর্তীতে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।