কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব এর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতিষ্ঠানে নানান দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক, স্থানীয়রাসহ সুশীলজন

কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব এর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতিষ্ঠানে নানান দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক, স্থানীয়রাসহ সুশীলজন। এ ঘটনায় একাধিক অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পান নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, রাজারহাট শিক্ষা অফিসে চাকুরী করেন আব্দুর রব। নিজের হাতে তৈরি করা একটি সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে অধিনস্থ প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের নাম মাত্র অসঙ্গতি ধরে চক্রের মাধ্যমে অর্থ হাছিল করে আসছে। বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্কের জোরদার ও পতিত আওয়ামীলীগের সহচর হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এখনও প্রকাশ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। প্রচুর অহাথ হতিয়ে নেয়ার অভিযোগ জানান একধিকজন। তবে ঘুষ দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতায় মানুষ অতিষ্ট হলেও আব্দুর রবের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না কেউ। চতুর আব্দুর রব দুর্নীতির সামরাজ্য চালাতে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কবলে পরে শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রধানরা এখন জীম্মি। একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেও সুফল পায়নি ভুক্তভোগীরা। তবে বিষয়গুলো একেবারে অস্বীকার করেছেন ওই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, রাজারহাটে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল ও এনটিআরসি'র মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের এমপিও ভূক্তির ফাইল অগ্রগামী করার জন্য মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করেন তিনি। নতুন এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের ফাইল এবং বি এড অথবা সিনিয়র স্কেলের ফাইল টাকা ছাড়া সই করেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া ও বিভিন্ন অজুহাতে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের নিকট নানা অযুহাতে উৎকোচ ও উপহাড় গ্রহণ করেন। উপজেলার ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম তৈরী (২য় পর্যায় প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলাদাভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুমের উপকরণসমূহ ক্রয়ের জন্য কোটেশন আহবান করলে তিনি তার নিকটতম আত্মীয় মালিকানাধীন এ্যাটালিয়া কোম্পানীকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগে যান। পরে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধির অর্থায়নে তার কার্যালয়ে ঐ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে নিয়ে গোপন মিটিং করে উক্ত কাজ গুলো এ্যাটালিয়া
কোম্পানীকে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ বিষয়ের রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর রাজারহাটের আফনান ট্রেভাস একটি অভিযোগ দায়ের করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা আইসিটি অফিসার মোঃ রেজাউল হাসানকে নির্দেশ দেন। কিন্তু অঙ্গাত কারনে সে তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। সে সাথে নওদাবস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওয়ামীনেতা রিয়াজুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পেয়েও অর্থ ও আওয়ামী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারনে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন নাই।
তিনি নিজ জেলায় চাকুরি করার সুবাদে প্রতিনিয়ত সময় শেষে অফিসে আসেন কিছু সময় অতিবাহিত করে চলে যান। অনেক শিক্ষক দুর দুরান্ত থেকে এসে তাকে না পেয়ে ফিরে বিড়াম্বনায় পরতে হচ্ছে।
মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়ক আতাউর রহমান জানান, একজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নিজের জেলায় দীর্ঘদিন থাকা দৃষ্টিকটু ব্যাপার। আর তার বিরুদ্ধে যে সব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় শিক্ষাবিদ আখেরুজ্জামান জানান, একজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দীর্ঘদিন এক অফিসে চাকুরি করলে তার পরিধি বিস্তৃত হয়। ফলে যেকোন অনিয়ন ও দুর্নীতি করা সহজতর হয়। তার উপর এ কর্মকর্তা নিজ জেলায় চাকুরি করায় দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার স্বেচ্ছাচারিতা, অসৌজন্য আচরণ, শিক্ষদের মধ্যে গ্রæপিং ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা সহ নানা কারণে উপজেলায় শিক্ষার মান উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব জানাস, আমার সুনাম ধ্বংস করবার জন্য একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছেন।