নওগাঁ জেলায় জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত 'ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার' অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে

নওগাঁ জেলায় জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত 'ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার' অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী সাপাহার উপজেলার কিছু কিছু বাগানে আজ গুটি আম পাড়া শুরু হলেও বাজারে তেমন ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় দেখা যায়নি। ৩০ মে পর থেকে জমে উঠবে সাপাহার আম বাজার বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
সকালে সাপাহার উপজেলা সদরের পাইকারি আম বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বেচাকেনা একেবারেই কম। সকাল ৯টা পর্যন্ত মাত্র কয়েক মণ আম বিক্রি হয়েছে। বাজারে নেই পূর্বের মতো আমচাষি কিংবা পাইকারদের সক্রিয়তা।
স্থানীয় আম ব্যবসায়ী বুলবুল হোসেন জানান, “বাণিজ্যিক বাগানগুলোর আম এখনো পাকেনি। বাড়ির আঙিনা বা ছোট আকারে চাষ হওয়া গুটি আমই কেউ কেউ বাজারে আনছেন। তবে পরিমাণ কম। এসব আম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।" ৩০ মে গোপালভোগ বাজারে বেচা-কেনা শুরু হলে বাজার জমতে শুরু করবে বলেও জানান তিনি।
সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। আড়তে জমজমাট পরিবেশ নেই। কয়েকজন বিক্রেতা সাইকেল ও ভ্যানে করে অল্প পরিমাণ আম নিয়ে এসেছেন। প্রথম দিনেই ৪৮ কেজি ১ মণ হিসাবে বেচাকেনা শুরু হয়েছে, যা নিয়ে চাষিদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে।
সাপাহার আম আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন রিফাত বলেন, “আম্রপালি, নাক ফজলি, হাড়িভাঙা, বারি আম-৪ ও গৌড়মতি হচ্ছে সাপাহারের প্রধান জাত। এগুলোর পাকা মৌসুম জুনের মাঝামাঝি। আম্রপালি বাজারে এলে হাট জমবে। বর্তমানে এখানে আগাম জাতের চাষ কম, তাই বাজারও জমছে না।”
তিনি আরও জানান, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার থেকে ৪৮ কেজিকে এক মণ ধরা হচ্ছে, যার মধ্যে ক্যারেটের ওজন ৩ কেজি। ফলে 'ঢলতা' হিসেবে কার্যত ৫ কেজি করে বেশি ধরতে হচ্ছে।
সাপাহার বাজারে রবিউল ইসলাম নামে এক পাইকার জানান, তিনি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ মণ গুটি আম কিনেছেন ৭৬০ থেকে ৮৬০ টাকা দরে। এ সব আম সাধারণত আচার তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ বলেন, “নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিপক্ব আম সংগ্রহ বা বাজারজাতকরণ করা যাবে না। তবে আবহাওয়ার কারণে কোনো জাতের আম আগে পাকলে কৃষি বিভাগের সুপারিশে তারিখ পুনঃনির্ধারণ করে অনুমতি দেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, “আমে কোনো প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি থাকবে। সাপাহার গুরুত্বপূর্ণ আম বাজারগুলোতে বিশেষ মনিটরিং চলবে।”
জেলা প্রশাসনের ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী—২৩ মে থেকে গুটি আম, ২৮ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে হিমসাগর, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও হাড়িভাঙা, ১৮ জুন থেকে আম্রপালি, ২৫ জুন থেকে ফজলি ও ব্যানানা ম্যাঙ্গো, ১০ জুলাই থেকে বারি-৪, গৌড়মতি, আশ্বিনা ও কাটিমন আম সংগ্রহ করা যাবে।
সঠিক সময়ে আম বাজারজাত নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কড়া নজরদারির পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও চাষিদের সম্মিলিত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।