কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চলাচলের পাকা রাস্তা প্রতিপক্ষের লোকজন বন্ধ করে দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন একটি পরিবার। গত সাতদিন ধরে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছে না দরিদ্র ওই পরিবারটি।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভাধীন ৪ নং ওয়ার্ডের নিরাহারগাতী গ্রামের রওশন আলীর পুত্র কেরামত আলী ও একই গ্রামের প্রতিবেশী মৃত আরজ আলীর পুত্র সৌদি আরবফেরত রজব আলীর মধ্যে চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। জানা যায়, উপজেলার নিরাহারগাতী মৌজায় ১৯৮৬ সনে ০২/১৯৮৬ রেজিস্ট্রি দলিল মূলে, ৭৮/৭৯ দাগে ৩.৫ শতক জমির মালিকানা লাভ করেন কেরামত আলী। পরবর্তীতে হোসেনপুর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ৩৭১ খতিয়ান খুলে ৩.৫ জমির নামজারি করে নেন তিনি। অত:পর উক্ত জমির উপর দিয়ে কাঁচা রাস্তা তৈরি করে কেরামত আলীর পরিবার চলাচল করে আসছিল। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী রজব আলী গং বিরোধের জেরে সম্পূর্ণ রাস্তাটি  বন্ধ করে দেয়। পরে, ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কেরামত আলী। এরই প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবিয়া পারভেজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ রয়েছে। মানবিক কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে উপস্থিত থেকে রাস্তাটি খুলে দেন। অত:পর রজবালি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া পারভেজ সহ নয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই উক্ত মামলাটি সত্য প্রমাণিত না হওয়ায় খারিজ হয়ে যায়। এরপর তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি নাশিতা-তুল-ইসলাম মামলার রায়ের কপি নিয়ে বন্ধ রাস্তাটি খুলে দেন এবং সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন কে নিয়ে রাস্তাটি পাকা করে দেন। উক্ত পাকা রাস্তা দিয়ে কেরামত আলীর পরিবারের সদস্যরা প্রায় দেড় বছর ধরে যাতায়াত করে আসছিলো। চলতি মাসের ৮ ই এপ্রিল পাকা রাস্তাটি প্রতিপক্ষ রজব আলীগং দলবল নিয়ে ইট সুড়কি খুলে ফেলে এবং সম্পূর্ণ রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। কেরামত আলীর দুইপুত্র আবু বাক্কার ও ওসমান গনি বাধা দিতে গেলে রজব আলী ও তার সহযোগীরা তাদেরকে আহত করে। পরে, স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদেরকে হোসেনপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চলমান বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়ে যায়। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সাত দিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় পরিবারটি বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রতিবেশী রহমত আলী মাস্টার জানান, আমরা এলাকাবাসীকে নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া ব্যক্তিকে বারবার বললেও সে রাস্তা খুলে দিচ্ছে না। ভুক্তভোগী কেরামত আলী জানান, আমার খরিদা জমির উপর রাস্তা করলেও কয়েকবার রজব আলী রাস্তাটি বন্ধ করে পরিবারকে আটকে রেখেছেন। জানতে চাইলে প্রতিপক্ষ রজব আলীর ছেলে রিয়াজ উদ্দিন জানান, জায়গা পাওয়ার হিসাব একটা, মানবিক হিসাব একটা। বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়া দরকার। উনি (কেরামত) পাইলে আলাদা হিসাব। উনার সাইডে উনি নিয়ে নিবে।