প্রতি বছর আকাশপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষিত এক মহাজাগতিক প্রদর্শনী ‘পার্সাইড’ উল্কাবৃষ্টি এবারও আগামীর ১২ ও ১৩ আগস্ট রাতে আকাশজুড়ে উজ্জ্বল উল্কাপাতের দৃশ্য উপহার দিতে যাচ্ছে। যদিও পূর্ণিমার কাছাকাছি চাঁদের আলো কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে, তবু উজ্জ্বল উল্কাগুলো স্পষ্টভাবেই আকাশে দেখা যাবে।


পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি হলো বছরের অন্যতম উজ্জ্বল এবং জনপ্রিয় উল্কাবৃষ্টি, যার সময় প্রতি ঘণ্টায় ৫০ থেকে ১০০টি উল্কাপাত ঘটে। এসব উল্কাকে ‘মিটিওর’ বলা হয়, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে জ্বলে ওঠে এবং আকাশে আগুনের রেখার মতো ছড়িয়ে পড়ে। বড় ও উজ্জ্বল উল্কাগুলোকে ‘ফায়ারবল’ নামে অভিহিত করা হয়, যা এক অনন্য রোমাঞ্চকর দৃশ্য তৈরি করে।

গত বছর উল্কাবৃষ্টির সময় চাঁদের আলো না থাকায় উল্কাগুলো অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল। তবে এবারের পার্সাইড উল্কাবৃষ্টিতে চাঁদের আলো থাকায় কিছুটা ম্লান লাগতে পারে। তারপরও পার্সাইডের উল্কাগুলো এতটাই উজ্জ্বল যে তারা চাঁদের আলোয়ও সহজেই দৃশ্যমান হবে।

এই উল্কাবৃষ্টি শুরু হয়েছে ১৭ জুলাই থেকে এবং চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত। সর্বোচ্চ উল্কাপাত দেখা যাবে ১২ ও ১৩ আগস্ট রাতের মধ্যে, কারণ তখন পৃথিবী কমেট ১০৯পি/সুইফট-টাটলের ফেলে দেওয়া বরফ ও ধুলোর স্তরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে। এই ধূমকেতু ১৩৩ বছর পরপর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে; সর্বশেষ ১৯৯২ সালে পৃথিবীর কাছে এসেছিল।

পার্সাইড নামকরণ করা হয়েছে কারণ উল্কাগুলো আকাশের পার্সিয়াস নক্ষত্রমণ্ডল থেকে আসার মতো মনে হয়। ভালোভাবে উল্কাবৃষ্টি উপভোগ করতে হলে শহরের আলো থেকে দূরে, খোলা আকাশের নিচে থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে রাত ১০টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত সময়টি উপযোগী, যখন চাঁদ কিছুটা নিচে নামে এবং উজ্জ্বল উল্কাগুলো পরিষ্কার দেখা যায়। চোখ অন্ধকারে অভ্যস্ত করতে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করলে উল্কাগুলো আরও স্পষ্ট দেখা যাবে।

আকাশে উল্কাদের ঝলকানি দেখা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা যা স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। যারা এখনো দেখেননি, তাদের জন্য এবারের পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি এক বিশেষ রাত হতে চলেছে।