সুনামগঞ্জে অস্ত্র মামলায় এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

 সুনামগঞ্জ যুগ্ম  জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শ্যামা কান্ত সিংহা বুধবার বিকেলে এ রায় দেন।

দণ্ডিত ৪২ বছরের মনির হোসেন  জগন্নাথপুর  উপজেলার কাদিপুর এলাকার মৃত আ. গনির  ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, 
 ‘২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারীতে  মনির হোসেন জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলি এলাকায় সাদিপুর ব্রীজে অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং তামিল ডিউটি করা কালীন রাত বারোটার দিকে  মনির হোসেনকে দেখতে পায় দায়িত্বরত পুলিশ। মনির হোসেন টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে আটক করে। এসময় তার দেহ তল্লাশি করে গুলি সহ একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়। আসামি মনির হোসেন আন্তঃজেলা ডাকাত ছিল। ২০০৪ সালের ৪  আগষ্টে দিরাই থানার ধারা-১৮৭৮ সালের ১৯ - এ , জিআর-৫৪/৪ ( দিরাই )  এর অস্ত্র মামলার অভিযুক্ত আসামি ছিল।  
ওই মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে দোষী প্রমাণ হন মনির হোসেন।  তাকে দেয়া হয়েছে ১০ বছরের কারাদণ্ড।’

যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয়  আদালতের রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী তৌহিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, 
 একটি অস্ত্র মামলায় মামলা নং -বিশেষ ট্রাইব্যুনাল -৫৬/১৮ইং ১৯৭৮ ইং সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের (সংশোধিত /২০০২) এর 19A ধারায় আসামি মনির হোসেনকে আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।  যা একজন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এই রায় শুধু একটি মামলার নিষ্পত্তি নয়, এটি আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, 
​এই মামলার শুরু থেকেই আমরা সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি। প্রতিটি সাক্ষ্যপ্রমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং আদালতের সামনে তা সুচারুভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মনির হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো যে ভিত্তিহীন নয়, তা প্রমাণ করার জন্য আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আজকের এই রায় আমাদের সেই প্রচেষ্টারই ফল।
​এই রায়ের তাৎপর্য বহুমুখী। প্রথমত, এটি সমাজে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং এর সাথে জড়িত অপরাধ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। যারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাদের জন্য এটি একটি কঠোর হুঁশিয়ারি। দ্বিতীয়ত, এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করবে। যখন অপরাধীরা তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি পায়, তখন জনগণ অনুভব করে যে, আইনের আশ্রয় নিয়ে তারা নিরাপদ থাকতে পারে।
​একজন পিপি হিসেবে, আমার দায়িত্ব কেবল আসামীর শাস্তি নিশ্চিত করা নয়, বরং বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া এবং সমাজে শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করা। এই মামলায় আমরা সফল হয়েছি জেনে আমি গর্বিত। এটি প্রমাণ করে যে, সঠিক তথ্যপ্রমাণ এবং বলিষ্ঠ যুক্তির মাধ্যমে আইনের সঠিক প্রয়োগ সম্ভব।
​আমি বিশ্বাস করি, এই ধরনের দৃষ্টান্তমূলক রায় ভবিষ্যতে অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং একটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে আমাদের সহায়তা করবে।